পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আসসালামু আলাইকুম। আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে। তাই আজ আপনাদের সামনে আমাদের এই আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ কিভাবে পাওয়া যায়।

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩

এবং এই ভিসাটি পেতে গেলে কি কি কাগজপত্র আপনার প্রয়োজন হবে এই সকল বিষয়গুলো এখানে সুস্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হলো। আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়লে পর্তুগাল পার্ক ভিসা ২০২৩ সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারবেন এবং আপনি খুব সহজেই পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজে নিয়োগ গ্রহণ করতে পারবেন।

পর্তুগাল সম্পর্কে জেনে নিন

পর্তুগাল ইউরোপের সর্ব দক্ষিণের একটি দেশ যা আটলান্টিক মহাসাগরের পার ঘেঁষে পর্তুগাল অবস্থিত। এ দেশটির একটি অন্যতম নাম সাগরকন্যা। পর্তুগালের আয়তন ৯২ হাজার ২১২ বর্গ কিলোমিটার এবং এদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩৪ লাখ ৩ হাজার ৬৬ জন (২০২১)।

এদেশের ভাষা হল পর্তুগিজ। পর্তুগালের রাজধানী লিসবন এবং ইউরোপ ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং এর মুদ্রার নাম হলো ইউরো। পর্তুগালের সরকারের বা অফিসিয়াল নাম হল পর্তুগিজ রিপাবলিক।

বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু রয়েছে পর্তুগালে, এই ঝুলন্ত সেতুটির নাম ৫১২ আরুকা। এই ঝুলন্ত সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫১৬মিটার বা ১৬৯২ ফুট।  কানাডা জব ভিসা ২০২৩

এ দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ২৩ হাজার ৪৬৪ মার্কিন ডলার বিদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং দেশটির আবহাওয়া সবসময় শীতল থাকে।

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩

ইউরোপ মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হল পর্তুগাল এ দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় শ্রমিকের চাহিদা একটু বেশি। তাই পর্তুগাল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে  প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে  শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে।

পর্তুগালে কর্মী হিসেবে যাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার জন্য আপনার যে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে সে ওয়েবসাইট এবং এর লিংকটি আমি দিয়ে দিচ্ছি। আপনারা যেকোনো সময় এই সাইটে প্রবেশ করে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

পর্তুগালে যে সকল কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি

পর্তুগালে যে সকল কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে সে সকল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চাচ্ছি। যে সকল কাজের সুযোগ সবচেয়ে বেশি রয়েছে পর্তুগালে তা হচ্ছে শ্রমিকদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। যে সকল শ্রমিকদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি রয়েছে তা হলো হোটেল শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, ক্লিনার, ফ্যাক্টরি ও প্যাকেজিং এর শ্রমিক ইত্যাদি।

যারা যোগ্যতা সম্পন্ন রয়েছেন যেমন- কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার প্রোগ্রামার, কম্পিউটার সফটওয়্যার জানা, যে সকল ব্যক্তি রয়েছেন আপনাদের জন্য রয়েছে বিশাল অপরচুনিটি।

পর্তুগালে দক্ষ অভিজ্ঞ শ্রমিকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আপনি পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকেন না কেন আপনি যদি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন তাহলে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগালে সহজেই কাজ পেয়ে যাবেন।

পর্তুগালে কাজের যোগ্যতা

পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট বিষয় নিয়ে কাজ করতে চাইলে আপনার কিছু নুন্যতম যোগ্যতা থাকতে হবে। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে এইচএসসি পাস হতে হবে। আপনার ইংরেজিতে দক্ষতা থাকতে হবে। ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলার মত যোগ্যতা থাকতে হবে।

আপনি যে ভাষায় কথা বলেন না কেন কিন্তু পর্তুগালে কাজ করতে গেলে আপনার ইংরেজিতে প্রচুর দক্ষতা থাকতে হবে। ইংরেজি শেখার জন্য আপনি ইংরেজি স্পোকেন কোর্স সম্পূর্ণ করতে পারেন।

আপনি যখন ভিসার জন্য আবেদন করবেন আপনার ভিসা প্রদানের পূর্বে আপনার সাথে ইংরেজিতে তারা আপনার ইন্টারভিউ নিবে। উত্তীর্ণ হলে আপনি পর্তুগাল যাওয়ার আমন্ত্রণ পত্র পাবেন এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজ করতে পারবেন।

পর্তুগালে যেতে চাইলে আপনার একটি বিশেষ কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। আপনি যদি শ্রমিক ভিসায় কাজ করতে চান তাহলে আপনার যে বিভাগে কাজ করতে আগ্রহী সে বিষয়ে আপনার পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

যেমনঃ আপনি যদি নির্মাণ শ্রমিক হন তাহলে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। আর অভিজ্ঞতার সনদ প্রদান করতে হবে।

আপনি যদি হোটেল শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চান তাহলে আপনার হোটেলে কাজ করার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এবং আপনি যে হোটেলে কাজ করেছেন সে হোটেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা সনদ সংগ্রহ করতে হবে।

অর্থাৎ আপনার একটি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে আপনার কাজের ভিসা সংগ্রহ করতে পারলে তাহলে আপনার কাজ করতে আর কোন সমস্যা হবে না।

যাহারা উচ্চশিক্ষিত রয়েছেন তাদের মধ্যে আইটি সেকশন অর্থাৎ কম্পিউটার সংক্রান্ত অভিজ্ঞ লোকদের পর্তুগালে অগ্রাধিকার দেয়া থাকে। আপনি যদি কম্পিউটার বিষয়ে পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে পর্তুগালে যাওয়ার আবেদন করলে খুব সহজে আপনি ভিসা পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও মেডিকেল কর্মী নেওয়ার পর্তুগালের প্রতি বছর চাহিদা দিয়ে থাকে। মেডিকেলে কাজ করার জন্য নার্স এবং ডাক্তারদের প্রদান করা হয়ে থাকে। নার্স এবং ডাক্তারদেরকে উচ্চ বেতনে চাকরি প্রদান করে থাকে। আপনি যদি অভিজ্ঞ ডাক্তার বা নার্স হয়ে থাকেন তাহলে আপনি পর্তুগালে খুব ভালো বেতনে চাকরি করতে পারবেন।

এছাড়াও অনেক স্টুডেন্ট পর্তুগালে গিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব এর ব্যবস্থা রয়েছে। যারা বিভিন্ন দেশ থেকে পর্তুগালে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করে থাকে তাদের পার্ট টাইম জব করার সুযোগ রয়েছে।

স্টুডেন্টরা পার্ট টাইম জব করে তাদের পড়াশোনা খরচ চালাতে পারে। পড়াশোনা শেষে তাদের চাকরি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তারা সহজে নাগরিকত্ব নিতে পারবে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

পর্তুগালে ভিসার জন্য যে সকল কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় তা জেনে রাখুন।

  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং এই পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে
  • আপনার পাসপোর্টে কমপক্ষে দুইটি পাতা খালি থাকতে হবে যাতে পর্তুগালের ভিসা লেখা যায়
  • আপনার একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং ব্যাংক সলভেন্সিং সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে
  • পূর্বে কোন কোন দেশে ট্রাভেল করেছেন তার প্রমাণ দেখাতে হবে
  • আপনার কাজের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞ দাখিল করতে হবে
  • আপনার ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলার মত পারদর্শিতা থাকতে হবে।

পর্তুগালের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন

বাংলাদেশ বা বিশ্বের যে কোন দেশ থেকে আপনি পর্তুগালে যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করতে পারেন। প্রতিবছর পর্তুগাল সরকার বিভিন্ন শ্রমিক নিয়োগের জন্য সার্কুলার জারি করে থাকে। সেই সার্কুলার দেখে আপনি পর্তুগাল যাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

অনলাইনে আবেদন করার জন্য পর্তুগালের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে গেলে আপনি যে ওয়েব সাইটে প্রবেশ করবেন তা এখানে দেওয়া হলো। আপনি এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে পর্তুগালের বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে নিয়োগের সার্কুলার দেখে আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আপনি পৃথিবীর যে জায়গায় থাকুন না কেন আপনার অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন পর্তুগালে যাওয়ার জন্য। পর্তুগালে চাকরির আবেদনের জন্য যে লিংকটি প্রয়োজন তা হল https://www.schengenvisainfo.com/portugal-visa/।

উপরের লিংটিতে প্রবেশ করে আপনার প্রথমে অনলাইন এর মাধ্যমে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করতে হবে। সঠিকভাবে অনলাইনে আবেদনটি পূরণ করতে পারলে কিছুদিন পর আপনার একটি অনলাইনে ইন্টারভিউ নেয়া হবে।

আপনার সম্পর্কে এবং আপনার কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তারা কয়েকটি ইংরেজিতে প্রশ্ন করবে আপনি সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলে আপনাকে তারা আমন্ত্রণপত্র পাঠাবে এবং আপনি পর্তুগাল এম্বাসিতে যোগাযোগ করে পর্তুগাল যেতে পারবেন।

এছাড়াও আপনাদের যদি কোন আত্মীয়-স্বজন পর্তুগালে থাকে তাদের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে পারলে সবচেয়ে আপনি বেশি সফল হবেন। পর্তুগালের বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে প্রতি বছর বিদেশ থেকে লোক নিয়োগ করা থাকে। আপনারা যদি কোন আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে যেতে পারেন তাহলে আপনি শতভাগ নিশ্চয়তার সাথে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে পর্তুগালে যেতে পারবেন।

ইউরোপে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন এজেন্সি কাজ করে থাকে এ সকল এজেন্সির মাধ্যমেও আপনি সহজেই পর্তুগালে যেতে পারবেন। তবে এজেন্সি গুলোর মাধ্যমে অনেকেই প্রতারিত হয়ে থাকে। এজন্য যখনই আপনি কোন এজেন্সির মাধ্যমে পর্তুগালে যাবেন তখন অবশ্যই আপনার সে এজেন্সি গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে তারপরে টাকা পয়সা লেনদেন করবেন।

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ

পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চাইলে আপনার খরচটি নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না কারণ একেক দেশের এক এক রকম খরচ হতে পারে। তবে যারা বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে যেতে চান আপনার প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে।

বিভিন্ন দেশ থেকে পর্তুগাল সরকার কাজ করার জন্য জনশক্তি আমদানি করে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে গিয়ে পর্তুগালে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে থাকে।

পর্তুগাল সরকার প্রতি বছর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার অন্তর্ভুক্ত কৃষি শ্রমিক নিয়োগ প্রদান করে থাকে। কৃষি শ্রমিক ভিসা নির্মাণ শ্রমিক ভিসা এবং হোটেল শ্রমিক ভিসার ক্ষেত্রে খরচ প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। এ সকল শ্রমিকদের প্রায় ১০ লাখ টাকার মত খরচ হয়ে থাকে।

শেষ কথা

পরিশেষে পাঠক বন্ধুদের একটি কথা বলতে চাই আপনি যদি পর্তুগাল যেতে আগ্রহী হন তাহলে অবশ্যই অনলাইনে আবেদন করে পর্তুগাল যাবেন তাহলে আপনি কোন ঝামেলায় পড়বেন না। তবে অনেক এজেন্সির নামে প্রতারক চক্র রয়েছে যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লোক নিয়োগ দেবে বলে প্রচুর পরিমাণে টাকা হাতিয়ে নিয়ে তারা উধাও হয়ে চলে যায়।

ইউরোপে যেতে আগ্রহী বন্ধুরা অবশ্যই এজেন্সি গুলোর খোঁজখবর নিয়ে তারপর তাদের সাথে লেনদেন করবেন। আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি পরে আপনি পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। তারপরও কারো কিছু জানতে ইচ্ছা করলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন আমরা উত্তর দিতে চেষ্টা করব।

ট্যাগঃ

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩ পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *