দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩

দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩

প্রিয় বন্ধুরা, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আমি দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চাচ্ছি। আপনারা অনেকেই দুবাই যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।

দুবাই যেতে চাইলে আপনি কিভাবে ভিসার আবেদন করবেন এবং দুবাই কোম্পানি ভিসার মাধ্যমে গেলে কি কি সুযোগ সুবিধা পাবেন? আপনার বেতন ভাতা কত হবে? এ সকল বিষয় নিয়ে আমাদের আজকে এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। আশা করি আপনারা আমাদের এ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ ভালোভাবে পড়লে দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাবেন।

দুবাই সম্পর্কে জেনে নিন

দুবাই হল সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশের রাজধানী। দুবাই এর আয়তন ১৫৮৮ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। মাথাপিছু আয় ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার। দুবাইয়ে প্রবাসীর সংখ্যা মোট ও জনসংখ্যার প্রায় ৮৫%। এখানে ভারতীয় ৫১ শতাংশ,পাকিস্তানে ১৬ শতাংশ, বাংলাদেশী ৯ শতাংশ, ফিলিপিনুসরা ৩ শতাংশ এছাড়াও অন্যান্য দেশের লোকজন রয়েছে।

দুবাই আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র এখানের অর্থনীতি বাণিজ্য কর, পর্যটন, বিমান চালনা, রিয়েল এস্টেট এবং আর্থিক পরিষেবা থেকে প্রাপ্ত আয় দেশের প্রধান আয়ের খাত। দুবাই বিশ্বের বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প, প্রচুর হোটেল, বড় বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে অর্জন করেছে। বিশ্বের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে দুবাইয়ে পৃথিবীর সকল দেশের প্রতিনিধিরা আমদানি রপ্তানির জন্য সব সময় অবস্থান করা থাকে।

দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩
দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩

বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক দুবাই বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছে। তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে নানা রকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। কোম্পানি ভিসার মাধ্যমে দুবাই যেতে পারলে আপনি বেতন ভাতা বেশি পাবেন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দাও বেশি গ্রহণ করতে পারবেন।

আরও জানুন সৌদি আরবের ভিসা চেক এবং প্রসেসিং করার খরচ

অনেকেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, ফ্রি ভিসা অন্যান্য ভিসার মাধ্যমে গিয়ে নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে কোম্পানি ভিসা গ্রহণ করতে হবে তাহলে আপনি সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন।

দুবাই কোম্পানি ভিসায় যাবেন কেন?

আপনি দুবাই কোম্পানির ভিসায় যাবেন এর পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে আপনার বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধা। যখন আপনি কোম্পানি ভিসায় দুবাই যাবেন তখন কোম্পানির সাথে আপনি চুক্তিবদ্ধ হবেন সে চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানি আপনাকে বেতন- বোনাস ওভারটাইম ভাতা, থাকা খাওয়া, পরিবহন, চিকিৎসা নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা দিবে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রমিক রয়েছে যারা দুবাই গিয়ে বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সাথে জড়িত রয়েছে তারাও কোম্পানির আন্ডারে কাজ করার জন্য চেষ্টা চালায়। কোম্পানির আন্ডারে কাজ করতে পারলে আপনার কাজের নিশ্চয়তা বেশি। আপনার ভিসার মেয়াদ পর্যন্ত আপনি নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারবেন।

জেনে নিন

দুবাইয়ের কোম্পানি গুলোর সাথে বাংলাদেশের অনেক কোম্পানির চুক্তি রয়েছে সে চুক্তি অনুযায়ী শ্রমিক পাঠালে তারা শ্রমিকদেরকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। শ্রমিকদের কাজের ক্ষেত্রে দুবাইয়ে অন্যান্য ভিসার তুলনায় কোম্পানির ভিসা চাকরির নিশ্চয়তা ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।

কোম্পানি বিষয়ে আপনে দুবাই যেতে পারলে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি মূলক কাজ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের ভিসা জাল ভিসা বা দালাল চক্রের আওতায় কিছু লোক বিদেশে গিয়ে সর্বশ্রান্ত হয়ে যায়। তাই আপনারা কোম্পানির ভিসায় বিদেশে যাবেন। তাতে আপনাদের তেমন কোন অসুবিধা হবে না বরং কোম্পানি ভিসা দূতাবাসের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আপনি আপনার কর্মজীবন সুখময় করে গড়ে তুলতে পারবেন।

কোম্পানির ভিসায় যখন আপনি কাজ করবেন তখন আপনার বেতন ভাতা নিয়ে কোন ঝামেলা হবে না। কোম্পানি শ্রমিকদের বেতন ভাতা নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ একমাস পর আপনার একাউন্টে জমা দিবে। আপনার বেতন ভাতা নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না। তবে যারা কোম্পানির ভিসা ছাড়া যায় তাদের ক্ষেত্রে বেতন ভাতা নিয়েও অনেক ঝামেলা হয়ে থাকে।

দুবাই কোম্পানি ভিসা কি

দুবাই কোম্পানি ভিসা হল সংযুক্ত আরব আমিরাত অর্থাৎ দুবাইয়ে অবস্থিত যে সকল কোম্পানিগুলো রয়েছে তাদের আন্ডারে বৈদেশিক শ্রমিক বা প্রবাসীদের দিয়ে চুক্তি মোতাবেক কাজ করানো।

এ সকল শ্রমিকগণ শুধুমাত্র কোম্পানির আন্ডারে কাজ করবে তারা বাহিরে কোন কাজ করতে পারবে না। অন্যান্য ভিসার মাধ্যমে দুবাই গেলে তারা বিভিন্ন রকমের কাজের সাথে জড়িত হতে পারে।

এক কাজ ভালো না লাগলে অন্য কাজে যেতে পারে আবার কখনো দেখা যায় যে সকল মালিকদের আন্ডারে কাজ করে তারা বেতন ভাতা ঠিকমতো প্রদান করেনা তারা বিভিন্ন রকমের শিকার হতে পারে।

কিন্তু কোম্পানি ভিসার মাধ্যমে দুবাইয়ের কাজ করতে পারলে আপনার বেতন ভাতা নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না বরং তারা বেতন ভাতার পাশাপাশি ওভারটাইম কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট বোনাস থাকা খাওয়া চিকিৎসা সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে।

দুবাই শ্রমিক আইন অত্যন্ত শক্তিশালী হওয়ায় কোম্পানির আন্ডারে কাজ করতে পারলে সে সকল শ্রমিকগণ কখনোই তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না। আর দুবাই কোম্পানি গুলোর সাথে সরকার কর্তৃক এজেন্সির মাধ্যমে শক্তি অনুযায়ী কাজ দিয়ে থাকে।

সে চুক্তিতে কাজের বিবরণ বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধা সকল কিছু নির্দিষ্ট করা থাকে। এজন্য কোম্পানি ভিসায় দুবাই যেতে পারলে আপনি নিরাপদে কাজ করতে পারবেন।

বৈদেশিক শ্রমিক বা প্রবাসীদের এখন নিরাপদ কর্মসংস্থান ও মনোরম পরিবেশে কাজ করার মত উপযোগী পরিবেশ রয়েছে দুবাইয়ে। বিশেষ করে বাংলাদেশে শ্রমিক ইন্ডিয়ান শ্রমিক পাকিস্তানে শ্রমিক সহ অন্যান্য দেশের শ্রমিক গুলোর প্রতি রয়েছে অত্যন্ত চাহিদা।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে দুবাই কোম্পানি ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। আপনি যখনই দুবাইয়ের ভিসা সংগ্রহ করবেন তখন আপনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন যে সে এজেন্সিটি সরকারের অনুমোদিত কি না।

এই এজেন্সির মাধ্যমে যারা দুবাই গিয়েছে তারা কোম্পানি ভিসা পেয়েছে কিনা? তাদের ইনকাম কেমন হচ্ছে সুযোগ সুবিধা কেমন একটু যাচাই করে নিবেন।

এজেন্সির মাধ্যমে দুবাই যেতে পারলে আপনার কোন সমস্যা হবে না। তবে সরকারিভাবে যাওয়ার চেয়ে একটু খরচ বেশি হয়। আপনি যে এজেন্সির মাধ্যমে দুবাই যাবেন সেই এজেন্সির সাথে দুবাই যে সকল কোম্পানিগুলোর চুক্তি রয়েছে সে সম্পর্কে আপনাকে খোঁজখবর নিতে হবে।

অর্থাৎ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানার জন্য প্রবাসী কল্যাণ অফিসে আপনার ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে হবে আপনার বিষয়টি সঠিক কিনা তা যাচাই বাছাই করতে হবে।

কোম্পানি ভিসায় দুবাইয়ে কর্মী নিয়োগ

এবছর দুবাই সরকার বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রায় ২০ হাজার লোক নিবে বলে আশ্বস্ত করেছে। তাই যারা প্রবাসী হিসেবে বিদেশে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাহারা দুবাই নতুন বছরের এ কর্মসংস্থান এর সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।

দুবাই সরকার সব সময় দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। দুবাইয়ে কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। তাই কোম্পানি বিষয় লোক নিয়োগের সার্কুলার প্রথমে আপনাকে দেখতে হবে।

সে সার্কুলার অনুযায়ী যে যে কাজের জন্য লোক নিয়োগ করবে সে কাজে আপনাকে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আপনি দুবাই গিয়ে কাজ করতে পারবেন এবং কাজের পারিশ্রমিক ভালো পাবেন।

দুবাইয়ের কোম্পানি ভিসা বাংলাদেশিদের জন্য

প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশে শ্রমিক দুবাইয়ে অবস্থান করছে। বাংলাদেশি শ্রমিকারা অত্যন্ত সুনামের সাথে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ শ্রমিকের প্রতি দুবাইয়ের যথেষ্ট আন্তরিকতা রয়েছে।

আপনি যদি বাংলাদেশী নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে দুবাই যাওয়ার জন্য আপনার কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। বিশেষ করে কৃষি, ড্রাইভিং, রেস্টুরেন্টের শ্রমিক, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিশিয়ান, ক্লিনার, কনস্ট্রাকশন শ্রমিক সহ বিভিন্ন কোম্পানিগুলোতে লোক নিয়োগের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

তাই আপনার এ সকল কাজের মধ্যে যে কাজটি আপনার কাছে সবচেয়ে সহজ এবং ভালো লাগে সে কাজটির অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আপনি প্রবাসী হিসেবে দুবাই কাজে নিয়োগ নিতে পারেন্

দুবাইয়ে চাকরির সাইট

দুবাইয়ে চাকরি করার জন্য বেশ কিছু সাইট রয়েছে এ সকল সাইটগুলো আপনি ভিজিট করে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন। এখানে আপনার অনলাইনের মাধ্যমে প্রেরণ করতে হবে এবং তারা রাজি হলে আপনি যোগাযোগ করে সরাসরি নিয়োগ নিতে পারবেন।

এছাড়াও এই সাইটগুলোতে আবেদন করে বাংলাদেশে অবস্থানরত যে সকল সরকারের নিবন্ধিত এজেন্সি রয়েছে সে সকল এজেন্সিতে যোগাযোগ করে চাকরির জন্য ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।

দুবাইয়ের চাকরি আবেদন করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাইটের লিংক নিচে দেওয়া হল আপনারা এই লিংকগুলোর মাধ্যমে সহজে আবেদন করতে পারবেন।

  1. www.bayt.com/
  2. www.laimoon.com/
  3. oliv.com/
  4. www.naukrigulf.com/

কোম্পানি ভিসা নিয়ে জটিলতা

কোম্পানি ভিসা নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা বেশি থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিষয় নিয়ে অনেকের জটিলতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। অনেক সময় ভুয়া এজেন্সি গুলো লোভনীয় অফার দেখিয়ে লোক দুবাই পাঠিয়ে দেয় তারপর সেখানে ভালো মানের কোন কাজ না পেয়ে তারা দেশে চলে আসে।

গুলো এছাড়াও ভূয়া এজেন্সি গুলো প্রলোভন দেখিয়ে জাল ভিসা টুরিস্ট ভিসা বা কোন কোম্পানি নেই এরকম কোম্পানির নাম ব্যবহার করে দুবাইয়ের লোক পাঠিয়ে থাকে যার ফলে যারা এদের খপ্পরে পড়ে তারা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এমন অনেক লোক রয়েছে যারা ভিটে বাড়ি বিক্রি করে দুবাই চলে যায় কিন্তু কোন কাজ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আবার দেশে চলে আসতে হয়। তখন তারা আইনে আশ্রয় নিয়েও খুব একটা লাভবান হতে পারে না।

শেষ কথা

পরিশেষে আমি আপনাদের একটি বিষয়ের সতর্ক করতে চাই সেটি হচ্ছে আপনি যখনই দুবাই বা বিশ্বের যেকোনো দেশে যান না কেন আপনার ভিসাটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি অফিসের মাধ্যমে যাচাই করে নিবেন।

কারণ আপনি ভিসা যাচাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারবেন আপনার ভিসার মধ্যে কোন প্রকার গরমিল আছে কিনা।

দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ সম্পর্কে আপনাদের সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম। আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। আর কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা উত্তর দিতে চেষ্টা করব। সকলে ভালো থাকেন। আল্লাহ হাফেজ।

ট্যাগঃ

দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩ দুবাই কোম্পানি ভিসা ২০২৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *