এইচ এস সি পরীক্ষা/২২অর্থনীতি প্রথম পত্র(অধ্যায়ঃ সামগ্রিক আয় ও ব্যয়)

সুপ্রিয় শিক্ষার্থী, এইচএসসি পরীক্ষা-২০২২ এ অংশগ্রহণকারীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।তোমরা যারা এইচএসসি পরীক্ষায় অর্থনীতি বিষয়ে অংশগ্রহণ করবে, তোমাদের অর্থনীতি প্রথম পত্রের ৬টি অধ্যায় থেকে প্রশ্ন হবে।প্রশ্নের মান থাকবে ১০০ নম্বর ও সময় ৩ ঘণ্টা। এখানে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে ১১টি, উত্তর দিতে হবে ৭টি এবং নৈবিত্তিক থাকে থাকবে ৩০ টি উত্তর দিতে হবে সবগুলি।

নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-এইচ এস সি পরীক্ষা/২২অর্থনীতি প্রথম পত্র(অধ্যায়ঃ সামগ্রিক আয় ও ব্যয়)।

এইচ এস সি পরীক্ষা/২২অর্থনীতি প্রথম পত্র(অধ্যায়ঃ সামগ্রিক আয় ও ব্যয়) এর-

জ্ঞানমূলক প্রশ্নঃ

প্রশ্ন ১ঃ জিডিপি(মোট দেশজ উৎপাদন) কি?

উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে একটি দেশের ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে যে পরিমাণে পণ্য দ্রব্য ও সেবা কর্ম সৃষ্টি হয় তার আর্থিক মূল্য কে জিডিপি বলা হয়। এখানে  দেশের অভ্যন্তরে অবস্থানরত দেশী-বিদেশী সকল নাগরিকের অবদান অন্তর্ভুক্ত হলেও বিদেশে অবস্থানরত দেশের নাগরিক অর্থাৎ প্রবাসীদের আয় অন্তর্ভুক্ত হয় না।

প্রশ্ন ২ঃজিএনআই(মোট জাতীয় আয়) কি?

উত্তরঃ  একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে একটি দেশের  উৎপাদনের উপকরণ ব্যবহার করে দেশে ও বিদেশে যে পরিমাণ দ্রব্য সামগ্রী ও সেবাকর্ম সৃষ্টি হয় তার আর্থিক মূল্যকে জি এন আই বলে। তবে দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের আয় জিএনআই-এ অন্তর্ভুক্ত হয় না।

প্রশ্ন৩ঃএনএনআই (নীট জাতীয় আয়) কি?

উত্তরঃ মোট জাতীয় আয় থেকে মূলধন সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি জনিত ব্যয় বা অবচয় বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে এন এন আই বলা হয়।

প্রশ্ন৪ঃ সামগ্রিক আয়/জাতীয় আয় কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে কোন দেশের উৎপাদন উপকরণসমূহ কাজে লাগিয়ে যে পরিমাণ দ্রব্য সামগ্রী ও সেবাকর্ম উৎপাদিত হয় তার আর্থিক মূল্য সমষ্টিকে সামগ্রিক আয়/জাতীয় আয় বলা হয়।

প্রশ্ন৫ঃ ব্যয়যোগ্য আয় কাকে বলে?

উত্তরঃ ব্যক্তিগত আয় থেকে কর ও অন্যান্য দেয় বাদ দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে ব্যয় যোগ্য আয় বলা হয় । ব্যক্তিগত আয়ের যে অংশ তার ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করতে পারে তাই হল ব্যয় যোগ্য আয়।

প্রশ্ন৬ঃ দৈত গণনা সমস্যা কি? 

উত্তরঃ জাতীয় আয় পরিমাপের সময় একই দ্রব্য একাধিকবার গণনা করা হলে তাকে দৈত গণনা সমস্যা বলা হয়।

আরও জানুন

অনুধাবনমূলক প্রশ্নঃ

প্রশ্ন১ঃ প্রবাসীদের আই জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হয় না কেন?

উত্তরঃ কোন নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে কোন দেশের ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে যে পরিমাণ চূড়ান্ত পণ্য দ্রব্য ও সেবা সামগ্রী উৎপাদন করা হয় তাকে জিডিপি বলে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র দেশে অবস্থানরত দেশীয় ও বিদেশী নাগরিক দ্বারা উৎপাদন কে বোঝানো হয়ে থাকে। আর প্রবাসীরা দেশের সীমানার বাইরে অবস্থান করায় তাদের আয়ের জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।

প্রশ্ন২ঃ সঞ্চয় বাড়লে বিনিয়োগ বাড়ে- ধারণাটি বুঝিয়ে লেখ?

উত্তরঃ সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। সঞ্চয় সময়ের ব্যবধানে বিনিয়োগে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ আজকের সঞ্চয় আগামী দিনের বিনিয়োগ। অর্থাৎ সঞ্চয় বাড়লে বিনিয়োগ বাড়ে।

প্রশ্ন৩ঃ দুই খাত বিশিষ্ট অর্থনীতিতে সামগ্রিক ব্যয়ের উপাদান দুটি লেখ?

উত্তরঃ দুই খাত অর্থনীতি পরিবারবর্গ ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে গঠিত । অর্থনীতিতে সামগ্রিক ব্যয় হলো ব্যক্তিগত ভোগ ব্যয় ও ব্যক্তিগত অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ । পরিবারবর্গ এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভোগের জন্য  যে ব্যয় করে তাই ব্যক্তিগত ভোগ ব্যয়। পরিবারবর্গ, ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা মুনাফা অর্জনের জন্য কারখানা, গোদাম ঘর নির্মাণ ,যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল এবং বিভিন্ন উপকরণ চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবার মজুদ গড়ে তোলার জন্য ব্যয় করে। এটি মোট অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ অর্থনীতিতে সামগ্রিক দুটি অংশ একটি হল ভোগ ব্যয় আর অপরটি হল বিনিয়োগ।

প্রশ্ন৪ঃ জাতীয় আয়ের হিসাব এর সময় কেবলমাত্র চূড়ান্ত দ্রব্য অন্তর্ভুক্ত করা হয় কেন?

উত্তরঃ জাতীয় আয়ের হিসাব এর সময় কেবলমাত্র চূড়ান্ত দ্রব্য অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।কারণ আংশিক বা অর্ধ প্রস্তুত দ্রব্যের কোন সঠিকভাবে মূল্য নির্ণিত হয় না। আংশিক পণ্যের মূল্য নির্ধারণ ও গণনা অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়। তাই জাতীয় আয় পরিমাপের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র চূড়ান্তভাবে উৎপাদিত পণ্য দ্রব্য ও সেবা সামগ্রীর মুল্য সামগ্রিক আয়ে  অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্রশ্ন ৫ঃ আয় বাড়লে ভোগ ব্যয় বাড়ে কেন –ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ মানুষের আয় বাড়লে ভোগ ব্যয় বাড়ে । আর আয় হ্রাস পেলে ভোগ ব্যয়ও কিছুটা হ্রাস পায় । আয়ের সাথে ভোগব্যয় এর ধনাত্মক সম্পর্ক বিদ্যমান। মানুষের ভোগের মাধ্যমে উপযোগ নিঃশেষ করার জন্য যে ব্যয় হয় তাঁকে ভোগ ব্যয় বলে ।ভোগ ব্যয় আয় দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে।

প্রশ্ন৬ঃ জাতীয় আয় একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার মানদন্ড– বুঝিয়ে লেখ?

উত্তরঃ একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার মানদন্ড হলো জাতীয় আয়। যে কোন দেশের মানুষের জীবনযাত্রার বিস্তারিত তথ্য জাতীয় আয়ের থেকেই পাওয়া যায়। এইজন্য জাতীয় আয় অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে অধিক প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় আয় একটি দেশের  আয়ের সামগ্রিক চিত্র সর্ব সম্মুখে ফুটিয়ে তোলে যা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়।

আরও জানুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *