এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃ উৎপাদন, উৎপাদন ব্যয় ও আয়)

এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃ উৎপাদন, উৎপাদন ব্যয় ও আয়) এর

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তরঃ

প্রশ্ন ১ঃ উৎপাদন কি?

উত্তরঃ অর্থনীতিতে উৎপাদন একটি রূপান্তর প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যে নতুন উপযোগ সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন২ঃ উৎপাদনের প্রধান উপকরণ গুলো কি কি?

উত্তরঃ উৎপাদনের প্রধান উপকরণ ৪টি। যথাঃ ভূমি, শ্রম ,মূলধন ও সংগঠন।

প্রশ্ন৩ঃ ভূমি কি?

উত্তরঃঅর্থনীতিতে ভূমি বলতে প্রকৃতি প্রদত্ত যাবতীয় সম্পদকে বোঝায় যা উৎপাদন কাজে সহায়তা করে।

প্রশ্ন৪ঃ শ্রম কি?

উত্তর৫ঃ অর্থনীতিতে উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত মানুষের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমকে শ্রম বলা হয়।

প্রশ্ন৬ঃ মূলধন কি?

উত্তরঃমূলধন হলো মানুষের তৈরী উপাদান যা অধিক উৎপাদনের জন্য উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন৭ঃ সংগঠন কি?

উত্তরঃ উৎপাদন ক্ষেত্রে ভূমি , শ্রম ,মূলধন সংগ্রহ করে এদের মাঝে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে উৎপাদন কাজ  পরিচালনাকে সংগঠন বলা হয়।

প্রশ্ন৮ঃ উৎপাদন অপেক্ষক কি?

উত্তরঃ কোন ফার্মের ব্যবহৃত উপকরণ এবং বস্তুগত উৎপাদনের মধ্যকার সম্পর্ককে উৎপাদন অপেক্ষক বলা হয়।

প্রশ্ন৯ঃ উৎপাদন বিধি কি?

উত্তরঃ যে বিধির সাহায্যে উপকরণ নিয়োগ তথা উৎপাদন খরচ এবং উৎপাদনের আনুপাতিক পরিবর্তন জানা যায় তাকে উৎপাদন বিধি বলে।

প্রশ্ন১০ঃ মাত্রাগত উৎপাদন কি?

উত্তরঃ দীর্ঘকালে সব উপকরণের সমানুপাতিক বৃদ্ধিতে উৎপাদনের যে পরিবর্তন হয় তাকে মাত্রাগত উৎপাদন বলা হয়।

প্রশ্ন১১ঃ মাত্রাগত উৎপাদন কত প্রকার।

উত্তরঃমাত্রাগত উৎপাদন তিন প্রকার (ক্রমহ্রাসমান ,ক্রমবর্ধমান ও স্থির)।

প্রশ্ন১২ঃ উৎপাদন ব্যয় কি?

উত্তরঃ কোন পণ্য উৎপাদনের জন্য উপকরণ বাবদ উৎপাদনকারী যে ব্যয়  নির্বাহ করে তাকে উৎপাদন ব্যয় বলে।

প্রশ্ন১৩ঃ মোট ব্যয় কি

উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোন দ্রব্যের একটি নির্দিষ্ট পরিমান উৎপাদনের জন্য মোট যে ব্যয় হয় তাকে মোট ব্যয় বলে।

প্রশ্ন১৪ঃ গড় ব্যয় কি?

উত্তরঃ কোন দ্রব্য উৎপাদনের মোট ব্যয়কে মোট উৎপাদনের পরিমাণ দিয়ে ভাগ করলে গড় ব্যয় পাওয়া যায়।

প্রশ্ন১৫ঃ প্রান্তিক ব্যয় কি?

উত্তরঃ কোন দ্রব্যের উৎপাদন  অতিরিক্ত এক একক বৃদ্ধি করলে  মোট ব্যয়ের যে পরিবর্তন ঘটে থাকে এ দু’য়ের অনুপাতকে প্রান্তিক ব্যয় বলে।

প্রশ্ন১৬ঃ স্থির ব্যয় কি?

উত্তরঃ যে ব্যয় উৎপাদনের পরিমাণ এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয় অর্থাৎ উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে যে ব্যয় পরিবর্তন হয় না তাকে স্থিরব্যয় বলে।  যেমন: স্থায়ী কর্মচারীর বেতন, ঘর ভাড়া ইত্যাদি।

প্রশ্ন১৭ঃ মোট আয় কি?

উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট দামে, নির্দিষ্ট সময়ে,একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রব্য বিক্রি করে কোন ফার্ম বা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ অর্থ লাভ করে তাকে মোট আয় বলে।

প্রশ্ন১৮ঃগড় আয় কি?

উত্তরঃ কোন দ্রব্যের প্রতি একক দ্রব্য বিক্রি করে উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা যে অর্থ উপার্জন করে তাকে গড়  আয় বলা হয়। মোট আয়কে বিক্রীত দ্রব্যের পরিমান দ্বারা ভাগ করলে গড় আয় পাওয়া যায়।

প্রশ্ন১৯ঃপ্রান্তিক আয় কি?

উত্তরঃ উৎপাদিত দ্রব্যের অতিরিক্ত এক একক বিক্রয়ের দ্বারা যে অতিরিক্ত আয় পাওয়া  যায় তাকে প্রান্তিক আয় বলা হয়।

 

 

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তরঃ

প্রশ্ন১ঃ উৎপাদন মানে উপযোগ সৃষ্টি- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ উৎপাদন বলতে কোন দ্রব্য সৃষ্টি করাকে বুঝায় না বরং কোন দ্রব্যের উপযোগ সৃষ্টি কে বুঝায়। মানুষ কেবল প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদের আকার আকৃতি পরিবর্তন করে যে উপযোগ সৃষ্টি করে তাকে উৎপাদন বলা হয় । যেমন- আসবাবপত্রের বেলায় আমরা দেখি ,এখানে মানুষ শুধু কাঠের আকার আকৃতি পরিবর্তন করে বাড়তি উপযোগ সৃষ্টি করে আসবাবপত্র তৈরি করে ।অতএব, এই বাড়তি উপযোগ সৃষ্টি করায় উৎপাদন।

প্রশ্ন২ঃ মূলধন হলো উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান -ব্যাখ্যা কর ।

উত্তরঃ মানুষের শ্রম দ্বারা উৎপন্ন সম্পদের যে অংশ সরাসরি ভোগের কাজে ব্যবহৃত না হয়ে উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয় অর্থনীতিতে তাকেই মুলধন বলা হয় ।এ অর্থে কারখানার ঘর, যন্ত্রপাতি, গুদামঘর প্রভৃতি হল মূলধন। কারণ এগুলো মানুষের সৃষ্টি এবং সরাসরি ভোগ করা যায় না। তবে মানুষ তার বুদ্ধি খাটিয়ে ও পরিশ্রম করে এগুলোকে অধিক উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করে। প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ মূলধন নয় এটি তখনই মূলধন পরিণত হবে যখন মানুষ চেষ্টা ও পরিশ্রমের দ্বারা অধিক উৎপাদনের উপযোগী করে তুলবে। একারণে মূলধনকে উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান বলা হয়।

প্রশ্ন৩ঃ দীর্ঘকালীন উৎপাদন অপেক্ষক বলতে কি বুঝায়।

উত্তরঃ যে উৎপাদন অপেক্ষকে  উৎপাদনের সকল উপকরণ পরিবর্তনশীল সেই উৎপাদন অপেক্ষকে দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদন অপেক্ষক বলা হয়। এখানে স্থির ব্যয় হয় না,সকল ব্যয় পরিবর্তন যোগ্য ।এই উৎপাদন অপেক্ষক মূলত মাত্রাগত উৎপাদন নির্দেশ করে যেখানে উৎপাদনে ব্যবহৃত সকল উপকরণ একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে পরিবর্তন করা হয়।

প্রশ্ন৪ঃ মাত্রাগত উৎপাদন বলতে কি বুঝায়?

উত্তরঃ  দীর্ঘকালে ব্যবহৃত উৎপাদনের উপকরণ গুলোকে(ভূমি,শ্রম,মুলধন ও সংগঠন ) একই অনুপাতে পরিবর্তিত করলে উৎপাদনের পরিমাণে যে পরিবর্তন আসে তাকে মাত্রাগত উৎপাদন বলে। মাত্রাগত উৎপাদন ধারণাটি দীর্ঘকালের সাথে সম্পর্কিত । কারণ দীর্ঘকালে সকল উপকরণ পরিবর্তনশীল। সুতরাং উপকরণসমূহ একটি নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধি করলেও উৎপাদন কখনো স্থির ,ক্রমবর্ধমান ও ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়তে পারে।

প্রশ্ন৫ঃ শিল্পক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি কি কার্যকর।

উত্তরঃ শিল্পক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি কার্যকরী হয়। কেননা উৎপাদনের প্রথমদিকে শ্রম ও মূলধন বৃদ্ধির ফলে শিল্প অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ব্যয় সংকোচন সুবিধা লাভ করে। ফলে শিল্পের প্রতি উৎপাদন খরচ কমে ।এই অবস্থায় শিল্পে ক্রমবর্ধমান মাত্রাগত উৎপাদন বিধি কার্যকর থাকে কিন্তু কোন কারখানার আয়তন সীমাহীনভাবে বৃদ্ধি করা যায় না, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর শ্রম ও মূলধন অধিক নিয়োগ করলে উৎপাদন ক্রমবর্ধমানহারে না বেড়ে ক্রমহ্রাসমান হারে বাড়তে থাকে।

প্রশ্ন৬ঃ স্বল্পকালে স্থির ব্যয়ের উপাদান গুলো কি কি?

উত্তরঃ স্বল্পকালে উৎপাদনের সকল উপকরণ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই এক্ষেত্রে কিছু উপাদান স্থির হিসেবে বিবেচিত হয় ,যেগুলো ক্রয় বাবদ সংগঠন কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকে । যেমন- খাজনা, স্থায়ী কর্মচারীর মজুরি, যন্ত্রপাতির ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্যয় ইত্যাদি ।

প্রশ্ন৭ঃদীর্ঘকালে স্থির ব্যয় থাকে না কেন?

উত্তরঃ অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল বলতে এমন সময়কে বোঝায় যে সময়ে উৎপাদন এর সকল উপকরণ পরিবর্তন যোগ্য। স্বল্পকালে উৎপাদনের স্থির ব্যয় ও পরিবর্তনীয় ব্য়য়কে বোঝানো হয় ।কিন্তু দীর্ঘ কাল বলতে শুধু পরিবর্তনশীল ব্যয়কে নির্দেশ করে। কারণ দীর্ঘকালে স্থির ব্যয় ধরা হয় না ।আর এই সময় উৎপাদনের প্রায় সকল উপকরণ পরিবর্তন করা হয়। যেমন স্বল্পকালে কারখানার যন্ত্রপাতি স্থির থাকে কিন্তু দীর্ঘকালে তার পরিবর্তন সাধন করা হয় এই জন্যই দীর্ঘকালে কোন স্থির ব্যয় থাকে না ।

প্রশ্ন৮ঃ গড় স্থির ব্যয় বলতে কি বুঝায়?

উত্তরঃ মোট স্থির ব্যয়কে মোট উৎপাদনের পরিমাণ দ্বারা ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায় তাকে গড় স্থির ব্যয় বলে।অর্থাৎ প্রতি  একক দ্রব্য উৎপাদন করতে যে ব্যয় হয় তাকে গড় ব্যয় বলে।

প্রশ্ন৯ঃ অর্থনীতিতে স্বল্পকাল ও দীর্ঘকাল বলতে কি বুঝায়?

উত্তরঃ অর্থনীতিতে স্বল্পকাল বলতে সেই সময়কে বোঝায় যখন স্থির ও পরিবর্তনীয় উপকরণ গুলোর সমন্বিত প্রয়োগের ওপর উৎপাদন নির্ভরশীল হয়। স্বল্পকালে উৎপাদনের পরিমাণ এর পরিবর্তনের সাথে স্থির কোনো পরিবর্তন হয় না ।তবে উৎপাদনের নিয়োজিত বিভিন্ন পরিবর্তনশীল উপকরণের জন্য ফার্ম ব্যয় করে থাকে, যা  পরিবর্তনশীল ব্যয় নামে পরিচিত।

পক্ষান্তরে ,দীর্ঘকাল হলো এমন একটি সময় যখন নির্দিষ্ট প্রযুক্তি সাপেক্ষে সকল উপকরণ পরিবর্তন যোগ্য। এ সময়ে ফার্ম বা শিল্প উৎপাদনে যেকোনো উপকরণের পরিমাণ বাড়াতে বা কমাতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদের স্থির ব্যয়ের অস্তিত্ব থাকে না।

আরও জানুনএইচএসসি পরীক্ষা/২০২২ অর্থনীতি প্রথম পত্রের সংক্ষিপ্ত সাজেশন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *