এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃমুদ্রা ও ব্যাংক)

এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃমুদ্রা ও ব্যাংক)

নিম্নে এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃমুদ্রা ও ব্যাংক) এর-

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তরঃ

প্রশ্ন১ঃমুদ্রা কি?

উত্তরঃ যা বিনিময়ের মাধ্যম, ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের উপায়, মুল্যের পরিমাপক ও সঞ্চয়ের বাহন হিসেবে সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত ও সকলের নিকট সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য তাকে মুদ্রা বলা হয়।

প্রশ্ন২ঃ মুদ্রার প্রধান কাজ কি?

উত্তরঃ মুদ্রা হল সর্বজন গ্রাহ্য বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা।

প্রশ্ন৩ঃ বিহিত মুদ্রা কাকে বলে?

উত্তরঃ দৈনন্দিন লেনদেনে জনগণ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে যে অর্থ  ব্যবহার করতে  আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকে তাকে বিহিত মুদ্রা  বলে।

প্রশ্ন৪ঃ অসীম বিহিত মুদ্রা কি?

উত্তরঃ অসীম বিহিত মুদ্রা বলতে এমন এক মুদ্রা কে বুঝায় যা দিয়ে যে কোন পরিমাণ লেনদেন করা যায় এবং দেনা পাওনা পরিশোধ করলে পাওনাদার তা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকে।

প্রশ্ন৫ঃ আমানত কি?

উত্তরঃ সঞ্চয় কিংবা মুদ্রার নিরাপত্তা বিধানের জন্য জনসাধারণের সাধারণত বাণিজ্যিক ব্যাংকে যে হিসাব খুলে তাকে আমানত বলে।

প্রশ্ন৬ঃ সৃষ্ট আমানত কি?

উত্তরঃ প্রাথমিক আমানতের ভিত্তিতে ব্যাংক ঋণ গ্রহীতার নামে যে হিসাব খুলে চেক মারফত অর্থ উত্তোলনের যে সুযোগ দেওয়া হয় তাই হল সৃষ্ট আমানত।

প্রশ্ন৭ঃ মুদ্রার মূল্য কি?

উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুদ্রা দিয়ে যে পরিমাণ পণ্য বা সেবা ক্রয় করা যায় তাকে মুদ্রার মূল্য বলা হয়।

প্রশ্ন৮ঃ মুদ্রার চাহিদা কাকে বলে?

উত্তরঃএকটি নির্দিষ্ট সময়ে দেশের জনগণ বিভিন্ন প্রয়োজনে যে পরিমাণ মুদ্রা হাতে ধরে রাখতে চাই তাকে মুদ্রার চাহিদা বলে।

প্রশ্ন৯ঃ মুদ্রার সতর্কতামূলক চাহিদা কি?

উত্তরঃ পূর্বে পরিকল্পনা করা যায় না এমন ব্যয়  মেটানোর জন্য জনসাধারণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো কোন নির্দিষ্ট সময়ে যে পরিমাণ অর্থ হাতে রাখতে চাই তাকে মুদ্রার সতর্কতামূলক চাহিদা বলে।

প্রশ্ন১০ঃ সংকীর্ণ অর্থে অর্থের যোগান কি?

উত্তরঃ সংকীর্ণ অর্থে অর্থের যোগান বলতে একটি দেশে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে প্রচলিত কাগজের নোট ও ধাতব মুদ্রা প্রচলিত কারেন্সি এবং ব্যাংকে রক্ষিত সমষ্টিকে বুঝায়।

প্রশ্ন১১ঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ব্যাংক দেশের সমগ্র ব্যাংক ব্যবসা ও মুদ্রা ব্যবসা কে নিয়ন্ত্রণ করে তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে।

প্রশ্ন১২ঃ ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি?

উত্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দ্বারা প্রদত্ত ঋণের পরিমাণ ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করে তাকে ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলে।

প্রশ্ন১৩ঃ খোলাবাজার নীতি কি?

উত্তরঃ দেশের ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক খোলাবাজারে সরকারি ঋণপত্র ক্রয়-বিক্রয় করাকে খোলাবাজার’ নীতি বলে।

প্রশ্ন১৪ঃ বাণিজ্যিক ব্যাংক কি?

উত্তরঃ যে ব্যাংক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে মুদ্রা ও মুদ্রার মূল্য নিরুপন যোগ্য পণ্যদ্রব্যের লেনদেন করে থাকে তাকে বাণিজ্যিক ব্যাংক বলে।

প্রশ্ন১৫ঃ তারল্য নীতি কি?

উত্তরঃ গ্রাহকগণ তাদের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দানের ক্ষমতাকে তারল্য নীতি বলে।

প্রশ্ন১৬ঃ আমানত গ্রহণ কি?

উত্তরঃ আমানত গ্রহণ হলো জনগণ বা গ্রাহকদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় গুলোকে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে সংগ্রহ করা।

প্রশ্ন১৭ঃ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য কি?

উত্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন করা।

প্রশ্ন১৮ঃ অনলাইন ব্যাংকিং কি?

উত্তরঃ যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হয় তাকে অনলাইন ব্যাংকিং বলে।

প্রশ্ন১৯ঃ ই-ব্যাংকিং কি?

উত্তরঃ ইলেকট্রনিক যন্ত্রের সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্রুততার সাথে নির্ভুল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার নামই  হলো  ই-ব্যাংকিং।

প্রশ্ন২০ঃ ব্যাংক হিসাব কি?

উত্তরঃ যে হিসাবের মাধ্যমে ব্যাংক ও গ্রাহকের মধ্যকার সকল লেনদেন লিপিবদ্ধ করে রাখা হয় তাকে ব্যাংক হিসাব বলা হয়।

নিম্নে এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃমুদ্রা ও ব্যাংক) এর

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরঃ

প্রশ্ন১ঃ মুদ্রা শুধু বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে ?–ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সর্বজনস্বীকৃত ও সর্ব উৎকৃষ্ট বিনিময়ের মাধ্যম হলো মুদ্রা।  তবে , বর্তমানে মুদ্রা বিনিময় ছাড়াও আরো অনেক কাজ করে থাকে। যেমনঃ মূল্যের পরিমাপক, সঞ্চয় এর বাহন ,স্থগিত লেনদেনের মান ইত্যাদি। তাই বলা যায় মুদ্রা শুধু বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে না।

প্রশ্ন২ঃ মুদ্রার কার্যাবলী ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ মুদ্রার কার্যাবলী কে তিন ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন- বাণিজ্যিক কার্যাবলী ,সামাজিক কার্যাবলী ও মনস্তাত্ত্বিক কার্যাবলী । মুদ্রার মৌলিক কার্যাবলীকে বাণিজ্যিক কার্যাবলী বলা হয় ।যেমন -বিনিময়ের মাধ্যম মূল্যের পরিমাপক ইত্যাদি ।মানুষের জন্য কিছু সামাজিক কার্য সম্পাদন করে মুদ্রা । সামাজিক মর্যাদার প্রতীক , সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যম ও নিরাপত্তা প্রদানে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। মুদ্রা তার বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী মানুষকে বিপদের সময় শক্তি-সামর্থ্য যোগায় যা হলো মুদ্রার মনস্তাত্ত্বিক কার্যাবলী।

প্রশ্ন ৩ঃ অর্থের মূল্য বলতে কি বুঝ?

উত্তরঃ অর্থের মূল্য বলতে তাকে বুঝায় যা একটি নির্দিষ্ট সময়ে , একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দ্বারা যে পরিমাণ দ্রব্য সামগ্রী ও সেবা করা যায়। তাই অর্থের মূল্য হলো অর্থের ক্রয় ক্ষমতা তথা অর্থের মূল্য দুটি দিক বিবেচনা করা হয়। যথা – অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ক্রয় ক্ষমতা । দেশের মধ্যে অভ্যন্তরীণ অর্থের ক্ষমতাকে বুঝায় , অন্যদিকে অর্থের বৈদেশিক মুদ্রা বলতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তার ক্ষমতা কে বোঝায়।

প্রশ্ন৪ঃ দাম স্তর বাড়লে অর্থের মূল্য কমে কেন?

উত্তরঃ দাম স্তর বাড়লে অর্থের ক্ষমতা হ্রাস পায়, অর্থের মূল্য কমে যায়। কোন নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দ্বারা যে পরিমাণ দ্রব্য ক্রয় করা যায় তাকে বুঝায়। বাজারে যখন পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় তখন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ  দ্রারা  যে পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করা যেত আর তা পাওয়া যায় না। অর্থের প্রকৃত মূল্য কমে যাওয়াতে অদ্ভুত সমস্যার সৃষ্টি হয় এ কারণে দামস্তর বাড়লে অর্থের মূল্য কমে যায়।

প্রশ্ন৫ঃ অন্যান্য  অবস্থা অপরিবর্তিত অবস্থায় অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দ্রব্য মূল্যের কিরূপ পরিবর্তন হবে ? -ব্যাখ্যা করা।

উত্তরঃ অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত অবস্থায় অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে । সাধারণত, অন্যান্য অবস্থা স্থির রেখে অর্থের মূল্য হ্রাস করা হলে অর্থের যোগান বৃদ্ধি পায় এবং অর্থের যোগান বৃদ্ধি পেলে দ্রব্য সামগ্রীর দামস্তর বৃদ্ধি পায় ।অর্থাৎ অর্থের মূল্য অর্ধেক করা হলে অর্থের যোগান দ্বিগুণ হবে । আর অর্থের যোগান ও দ্রব্য সামগ্রীর দামস্তরও দ্বিগুণ হবে। কাজেই বলা যায় অর্থের মূল্য ও দামের মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান ।তাই অর্থের মূল্য হ্রাস পেলে দামস্তর বাড়বে।

প্রশ্ন৬ঃ ব্যাংক হার কিভাবে মুদ্রার যোগান কে প্রভাবিত করে?

উত্তরঃ ব্যাংক  হারের পরিবর্তন দ্বারা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রার যোগান নিয়ন্ত্রণ করে । কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন দেশের মুদ্রার যোগান কমাতে চায় তখন ঋণের পরিমাণ কমানোর জন্য ব্যাংক হার বাড়ায়। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট থেকে ঋণ নিতে অধিক হারে সুদ দিতে হয়, ফলে তাদের প্রদেয় ঋণের সুদের হার বেড়ে যায় । এই অবস্থায় ঋণগ্রহীতারা অধিক সুদ হারের জন্য স্বল্প পরিমাণ ঋণ  নেয় , ফলে অর্থের যোগান কমে। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশে মুদ্রার পরিমান বাড়াতে চাইলে ব্যাংক কমিয়ে দেয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কম সুদে ঋণ গ্রহণ করে  অধিক  ঋণ দিতে সামর্থ্য হয়।

প্রশ্ন৭ঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সকল ব্যাংকের ব্যাংক –ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো দেশের অর্থ বাজার এবং ব্যাংক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র ব্যাংক ।এই ব্যাংক নোট ও মুদ্রা ইস্যু করে সরকারের এবং অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করে ।অন্যান্য ব্যাংক তাদের নগদ সঞ্চয়ের একটি অংশ প্রচলিত রীতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে ।এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংকের উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং দুর্দিনে তাদেরকে ঋণ দিয়ে সাহায্য করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহের মধ্যে আন্তঃব্যাংকিং কাজ সম্পন্ন করে। এছাড়া অন্যান্য ব্যাংকসমূহকে পুনঃবাট্রা সুবিধা প্রদান করে থাকে ।এভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সকল ব্যাংকের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করে।

প্রশ্ন৮ঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে  ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল বলা হয় কেন?

উত্তরঃ দেশের তালিকাভুক্ত ব্যাংক গুলো তারল্য সংকটের সময় বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ সংগ্রহে ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শরণাপন্ন হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ বাজারের অভিভাবক হিসেবে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে ঋণ দানে এগিয়ে আসে ।এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি ঋণ প্রদান করে অথবা ভন্ড সিকিউরিটি ইত্যাদি ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দুর্দিনে তহবিলের যোগান দিয়ে থাকে। এরূপ ভূমিকার কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ঋণদানের শেষ আশ্রয়স্থল বলা হয়।

আরও জানুন এইচএসসি পরীক্ষা/২০২২ অর্থনীতি প্রথম পত্রের সংক্ষিপ্ত সাজেশন

এইচএসসি অর্থনীতি প্রথম পত্র (অধ্যায়ঃমৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা এবং এর সমাধান)

এইচএসসি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃ ভোক্তা ও উৎপাদকের আচরণ)

এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃ উৎপাদন, উৎপাদন ব্যয় ও আয়)

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *