এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃ বাজার)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তরঃ
প্রশ্ন১ঃ অর্থনীতিতে বাজার বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ বাজার বলতে নির্দিষ্ট কোনো পণ্যকে বোঝায় যা ক্রেতা ও বিক্রেতা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দরকষাকষির মাধ্যমে নির্দিষ্ট দামে ক্রয় বিক্রয় করে থাকে।
প্রশ্ন২ঃ বাজার কাঠামো কি?
উত্তরঃ বাজারে যেসব শর্তের প্রেক্ষিতে প্রতিযোগিতা সংঘটিত হয় সেসব অবস্থার সমন্বিত রূপকে বাজার কাঠামো বলে।
প্রশ্ন৩ঃ অতি স্বল্পকালীন বাজার কি?
উত্তরঃ যে ক্রয় বিক্রয় স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় সে বাজারকে অতি স্বল্পকালীন বাজার বলে। যেমনঃ মাছ ,শাক সবজির বাজার ইত্যাদি।
প্রশ্ন৪ঃ দীর্ঘকালীন বাজার কি?
উত্তরঃ যে বাজারে দ্রব্যের চাহিদা পরিবর্তনের সাথে সারা দিয়ে যোগান পরিবর্তন করা যায় তাকে দীর্ঘকালীন বাজার বলে।যেমনঃ কম্পিউটার , মোটরগাড়ি ইত্যাদি্
প্রশ্ন৫ঃ জাতীয় বাজার কি?
উত্তরঃ যে সকল পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় দেশের মধ্যে সমস্ত এলাকা জুড়ে বিস্তৃত থাকে তাকে জাতীয় বাজার বলে।
আরও জানুন এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর( অধ্যায়ঃমুদ্রা ও ব্যাংক)
প্রশ্ন ৬ঃ পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজার কি?
উত্তরঃ যে বাজারে বহুসংখ্যক ক্রেতা ও বিক্রেতা একটি সমজাতীয় দ্রব্য একটি নির্দিষ্ট দামে ক্রয় বিক্রয় করে থাকে তাকে পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজার বলে।
প্রশ্ন৭ঃ বাজার ভারসাম্য কি?
উত্তরঃ বিক্রেতার মধ্যে দরকষাকষির ভিত্তিতে বাজার চাহিদা ও যোগানের যে সমতা পরিলক্ষিত হয় তাকে বাজার ভারসাম্য বলে ।
প্রশ্ন ৮ঃ একচেটিয়া বাজার কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বাজারে মাত্র একজন উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা কোন দ্রব্যের সম্পূর্ণ যোগান নিয়ন্ত্রণ করে এবং দ্রব্যটির নিকট পরিবর্তিত দ্রব্য থাকে না তাকে একচেটিয়া বাজার বলে।
প্রশ্ন ৯ঃ ডুয়োপলি বাজার কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বাজারে মাত্র দুইজন বিক্রেতা সমগ্র বাজারে পণ্যের যোগান নিয়ন্ত্রণ করে তাকে ডুয়োপলি বাজার বলে।
প্রশ্ন১০ঃ ডুয়োপসনি বাজার কি?
উত্তরঃ ক্রেতার সংখ্যা মাত্র দুইজন কিন্তু বিক্রেতার সংখ্যা অসংখ্য তাকে ডুয়োপসনি বাজার বলে।
প্রশ্ন১১ঃ ফার্ম কি
উত্তরঃ অর্থনীতিতে সমজাতীয় দ্রব্য বা সেবার উৎপাদনকারী কোন একক প্রতিষ্ঠানকে ফার্ম বলা হয়।
প্রশ্ন১২: স্বাভাবিক মুনাফা কি?
উত্তরঃ যখন মোট আয় ও মোট ব্যয় সমান অবস্থায় মুনাফার পরিমাণ শূন্য হয় তখন তাকে স্বাভাবিক মুনাফা বলে।
আরও জানুন এইচ এস সি অর্থনীতি ১ম পত্র প্রশ্নোত্তর (অধ্যায়ঃ উৎপাদন, উৎপাদন ব্যয় ও আয়)
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তরঃ
প্রশ্ন১ঃ একচেটিয়া কারবারি কিভাবে দামের উপর প্রভাব বিস্তার করে?
উত্তরঃ একচেটিয়া বাজারে একজন বিক্রেতা থাকে এবং বাজারে ফার্মের নিকটবর্তী পরিবর্তক থাকেনা । তাই সে বাজারে দামের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে । এক্ষেত্রে পণ্যের যোগান বাড়াতে বা কমাতে এবং পণ্যের দামও ইচ্ছামত পরিবর্তন করতে পারে।
প্রশ্ন২ঃ পূর্নপ্রতিযোগিতায় ফার্মকে ’দাম গ্রহীতা’ বলা হয় কেন?
উত্তরঃ পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজার কাঠামোর দ্বারা এরূপ বাজার কি বুঝায় , যেখানে অসংখ্য ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাধীনভাবে পূর্ণমাত্রায় প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করে। পূর্ণ প্রতিযোগিতায় এরুপ বাজার কাঠামো নির্দেশ করে যেখানে ফার্মসমূহের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকে । কারণ বাজার তথ্য সম্পর্কে সবাই অবগত। বাজারে অংশগ্রহণকারীদের ভূমিকা যেখানে অকিঞ্চিৎকর, সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো সুযোগ থাকেনা। তাই পুর্ণ প্রতিযোগিতায় ফার্মকে দাম গ্রহীতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও জানুন এইচ এস সি পরীক্ষা/২০২২ অর্থনীতি প্রথম পত্র (প্রশ্ন-উত্তর)
প্রশ্ন৩ঃ ক্রেতা বাজার কে নিয়ন্ত্রণ করে বিক্রেতা নয় –ব্যাখ্যা করো?
উত্তরঃ কোন পণ্যের বাজারে বিক্রেতা অনেক থাকলেও যদি মাত্র ক্রেতা একজন থাকে তাহলে ওই বাজারকে মনোপসনি বাজার বরা হয়। কোনো সম্পদ ,উপকরণ বা দ্রব্যের বিক্রয় কারী বেশি হলেও যদি ক্রেতা কেবল মাত্র একজন থাকে তাহলে এ বাজারের উদ্ভব ঘটে । আমাদের দেশে কোন অঞ্চলে আখ চাষী অনেক থাকলেও সেখানে কেবলমাত্র একটি চিনিকল আছে বলে আখের ক্রেতা হয় একজন যদিও বিক্রেতা থাকে অনেক । এসব বাজারে ক্রেতা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বিক্রয় নয়।
প্রশ্ন ৪ঃএকচেটিয়া বাজারে ফার্ম ও শিল্প অভিন্ন –ব্যাখ্যা করো?
উত্তরঃ কয়েকটি ফার্ম নিয়ে শিল্প গঠিত হয়। যেহেতু একচেটিয়া বাজারে একক ফার্মের বাজার। তাই এই বাজারে ফার্ম ও শিল্প একই। আলাদাভাবে শিল্পের অস্তিত্ব দেখা যায় না । তাই ,একচেটিয়া বাজারে ফার্ম ও শিল্প একই বা অভিন্ন।
প্রশ্ন৫ঃ পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজার দাম স্থির থাকে কেন?
উত্তরঃ পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারের মূল শর্ত হলো P=AR=MR । এ শর্ত বলতে বুঝায় যে, ফার্মই হলো দাম গ্রহীতা ।এজন্য বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকে না এবং পূর্ণ স্থিতিস্থাপক চাহিদা রেখা সমান বাজার দাম । পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে চাহিদা রেখা নিম্নগামী হয় । এখানে দেখায় যে, দাম বাড়লে চাহিদা কমে। দাম নির্ধারিত হয় বাজারের চাহিদা ও যোগান দ্বারা। এই নির্বাচিত দাম স্বতন্ত্র একটা ফার্মকে গ্রহণ করতে হয় এবং এ দামেই বিক্রি করতে হয়। এজন্যই পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দাম স্থির থাকে।
প্রশ্ন৬ঃ একচেটিয়া বাজারে বিক্রেতাকে দামের স্রষ্টা বলা হয় কেন?
উত্তরঃ একচেটিয়া বাজারের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কোন ফার্মের দ্রব্যের নিকট কোন পরিবর্তন দ্রব্য বাজারে থাকে না , সে তার ইচ্ছামত যোগান বাড়াতে বা কমাতে পারে এবং দাম নির্ধারণ করতে পারে। তাই একচেটিয়া বাজারে ফার্মকে দাম সৃষ্টিকারী বলা হয়।
প্রশ্ন৭ঃ পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ফার্ম দীর্ঘকালে স্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করে –ব্যাখ্যা করো?
উত্তরঃ পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কোন ফার্ম দীর্ঘকালে যদি অস্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করে তবে নতুন নতুন ফার্ম বাজারে প্রবেশ করবে ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে দ্রব্যের দাম কমতে থাকবে এবং ততক্ষণ পর্যন্ত কমবে যতক্ষণ না ফার্ম স্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করছে। আবার দীর্ঘকালে কোন ক্ষতি স্বীকার করে দীর্ঘদিন উৎপাদন করতে পারবেনা ,সে শিল্প হতে প্রস্থান করবে। সুতরাং দেখা যায়, পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ফার্ম দীর্ঘকালে শুধুমাত্র স্বাভাবিক মুনাফা অর্জন করে থাকে।
প্রশ্ন৮ঃ ক্ষতি অবস্থায় একটি ফার্ম স্বল্পকালে কখন উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যায়?
উত্তরঃ SAC>P>AVC হলে ফার্ম লোকসান স্বীকার করেও উৎপাদন চালিয়ে যাবে। কেননা P>AVC হলে ফার্ম তার অর্জিত আয় দিয়ে পরিবর্তনীয় খরচ তুলেও স্থির খরচের একটি অংশ তুলে নিতে পারে। তাই উৎপাদন চালালে লোকসান হবে স্থির খরচের চেয়ে কম । অথচ উৎপাদন না করলে ফার্মকে পুরো স্থির খরচই লোকসান গুনতে হবে। তাই উৎপাদন চালিয়ে সে লোকসান ন্যূনতম করতে চাইবে।
প্রশ্ন৯ঃ মনোপলি ও মনোপসনি বাজারের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে?
উত্তরঃ মনোপলি ও মনোপসনি বাজারে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে । মনোপলি বাজার বলতে একচেটিয়া বাজার কে বোঝায় অর্থাৎ যখন কোন দ্রব্যের যোগান একজন ব্যক্তি বা একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান এরপর নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর যখন মাত্র একজন ক্রেতা থাকে এবং বিক্রেতার সংখ্যা অসংখ্য তাকে মনোপসনি বাজার বলে।