অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা

 অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা

 অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা

প্রিয় বন্ধুরা আজ আপনাদের জানাতে চাচ্ছি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা প্রত্যেকেরই জানা প্রয়োজন। বিষয়টি হচ্ছে অনলাইন ব্যাঙ্কিং অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা কি কি সুবিধা পাবে এবং কি কি অসুবিধা রয়েছে এ সকল বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করবো আমাদের এই আর্টিকেলে। আপনি যদি অনলাইন ব্যাংকিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন তাহলে আপনি অনলাইন সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পেয়ে যাবেন।

আরও জানুন মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা ও অসুবিধা

মানুষের জীবন যাপনের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি মুহূর্তেই অর্থের কোন বিকল্প নেই। অর্থ মানুষের সব সময় প্রয়োজন হয় তবে অর্থ কারো কাছে স্থির থাকে না। সময় এবং প্রয়োজনের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের অর্থ এক হাত থেকে অন্য হাতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে ,আর অর্থের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে হাসি কান্নার ইতিহাস। হাসি কান্নার ইতিহাস তৈরীর জন্য বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন ব্যাবসায়িক সহযোগীর কাছে দেশের ভিতরে বাহিরে অর্থ পাঠানোর প্রয়োজন হয়,আর অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে অভাবনীয় সুযোগ সৃষ্টি করেছে বিশ্ববাসীর কাছে অনলাইন ব্যাংকিং।

অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা
অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা

অনলাইন ব্যাংকিং কি

অনলাইন ব্যাংকিং হচ্ছে অর্থনৈতিক লেনদেনের এমন একটি প্রক্রিয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের ইন্টারনেট নির্ভর প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত অল্প সময়ের মধ্যে নির্ভুলভাবে গ্রাহকদের নিকট আর্থিক সুবিধা প্রদান। অর্থাৎ অনলাইন ব্যাংকিং ইন্টারনেট প্রযুক্তির সাহায্যে সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য নির্ভেজাল ভাবে এবং খুব সহজে গ্রাহকদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা।

ব্যাংকের গ্রাহকগণ ঘরে বসেই ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যাংকের সুনিদৃষ্ট অসুরক্ষিত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের অসুবিধা গ্রহণ করতে পারে এই ক্ষেত্রে গ্রাহকদের একটি আইডি ও পিন নাম্বার ব্যবহার করতে হয়।

বাংলাদেশ অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম

বিশ্ববাসীর সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত তফসিলী ব্যাংকসমূহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করল সকল সকল শাখাতেই সুবিধা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

বাংলাদেশে যে সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের গ্রাহকদের সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, যমুনা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ইত্যাদি।

অনলাইন ব্যাংকিং এর সুবিধা

  • দিন-রাত 24 ঘণ্টাই ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যায় অর্থাৎ বন্ধের দিনগুলোতে টাকা উত্তোলনের সুযোগ রয়েছে।
  • ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা যায় এবং শপিং মল থেকে কেনাকাটা করা যায়।
  • পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে যেকোনো সময় টাকা আদান প্রদান করা যায়।
  • বাড়িতে বা ঘরে বসেই ব্যাংকিং লেনদেন করা যায় বলে এর মাধ্যমে সময় সাশ্রয় হয় এবং ঝামেলা কম হয়।
  • আর্থিক লেনদেন অল্পসময়ের মধ্যেই অর্থাৎ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করা যায়।
  • গ্রাহকদের লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন হয়না এবং কষ্ট করার প্রয়োজন হয় না।
  • প্রচলিত ব্যাংকিং সিস্টেম এর চেয়েও খরচ কম হয়।
  • অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল যেমন বিদ্যুৎ বিল গ্যাস বিল পানির বিল সহ যাবতীয় বিল পরিশোধ করা যায়।
  • অনলাইন ব্যাংকিংয়ের সুবিধার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে এবং লেনদেন তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ হয়েছে।
  • গ্রাহকগণ তার নিজের একাউন্ট এর কার্যকারিতা এবং সার্বিক অবস্থা জানতে পারে নিজের স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে তার আইডি ওপেন ব্যবহারের দ্বারা।
  • অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করা যায় দিবারাত্রি যেকোনো সময়।

অনলাইন ব্যাংকিংয়ের অসুবিধা 

  • অনলাইন ব্যাংকিং এর অসুবিধা তুলনামূলকভাবে সুবিধার চেয়ে কম কারণ অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের লেনদেন হয়েছে অনেক সহজ এবং নিরাপদ। এত সুবিধা থাকার পরও কিছু অসুবিধা থাকতেই পারে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। নিম্নে কিছু অসুবিধা আলোচনা করা হলো।
  • অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকসমূহ দেশের সমস্ত এলাকায় সেবাদান কার্যক্রম দিতে পারছে না।
  • ইন্টারনেট প্রযুক্তি সারাদেশে ভেবে চলমান না থাকায় অনলাইনে ব্যাংকিং সুবিধা গ্রাহকরা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নিতে পারছে না।
  • গ্রাম অঞ্চলের মানুষ অধিকাংশ নিরক্ষর অল্প শিক্ষিত হয় তারা অনলাইন ব্যাংকিং এর সুবিধা গুলো গ্রহণ করতে পারছে না।
  • ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড অন্য কেউ জেনে গেলে দুস্কৃতিকারীরা জেনে গেলে মুহুর্তের মধ্যেই টাকা অ্যাকাউন্ট শূন্য হতে পারে।
  • অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে হ্যাকারদের কবলে পড়ে অনেক গ্রাহক তাদের অ্যাকাউন্ট 0 ব্যালেন্স এ চলে এসেছে। হ্যাকাররা অনলাইন একাউন্ট ধারীদের নিকট অর্থ লোপাটের জন্য তারা নানা ধরনের কৌশল ব্যবহার করে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড টা জেনে নিতে চেষ্টা করে যা গ্রাহকদের টাকা লুটের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অনলাইনে ব্যাংকিংয়ের লেনদেনের ক্ষেত্রে যা মনে রাখবেন ?

প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার আপনার অনলাইন ব্যাংকিংয়ের একাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করবেন।

আপনি যে কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন সেটি চেক করে দেখবেন কোন ধরনের ভাইরাস আছে কিনা ভাইরাস মুক্ত হওয়ার জন্য আপনি ভালো একটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইন্সটল করে রাখবেন আপনার ডিভাইসটি নিরাপত্তার জন্য।

আপনার অনলাইন ব্যাঙ্কিং পাসওয়ার্ড ইউজার আইডি অন্য কোন ব্যক্তির সাথে শেয়ার করবেন না। সাইবার ক্যাপ এর মত জায়গায় কখনো ইন্টারনেট ব্যাংকিং এ লেনদেন করবেন না। এমনভাবে আপনার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড আপনার অনলাইন ব্যাংকিং এর অ্যাকাউন্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করুন যাতে কোন হ্যাক করে সহজেই ধরতে না পারে।

আরও পড়ুন

যেভাবে ইন্টারনেট ব্যাংকিং শুরু করবেন ?

ইন্টারনেট ব্যাংকিং শুরু করার জন্য প্রথমে আপনার ব্যাংকের যে শাখায় একাউন্ট রয়েছে সেখানে গিয়ে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের সাথে কথা বলতে হবে। আর আপনার যদি কোন ব্যাংকের একাউন্ট না থাকে তাহলে আপনার প্রথমে একাউন্ট খুলতে হবে।

অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আপনাকে ব্যাংকের শাখা হতে একটি অনলাইন কার্যক্রমের ফরম সংগ্রহ করতে হবে এই ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করে ব্যাংকের শাখায় জমা দিতে হবে।

ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দেওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর ব্যাংক হইতে আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড ইউজার আইডি প্রদান করবে এই পাসওয়ার্ড এবং ইউজার আইডি মাধ্যমে অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনলাইন ব্যাংকিং এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে আপনি যখন অনলাইন ব্যাংকিং এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন সেখান থেকে আপনাকে কিছু প্রশ্ন করা হবে আপনি প্রশ্নগুলোর সঠিক ভাবে উত্তর দিবেন এরপর আপনার অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু হবে।

অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম সাথে সাথে আপনার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সকল ধরনের অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন এবং আপনার অ্যাকাউন্টের সমস্ত ভূবনে দেখতে পারবেন।

অনলাইন ব্যাংকিং মানুষের জীবন যাপনের ক্ষেত্রে আরো আরামদায়ক প্রগতিশীল করে তুলেছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা বাংলাদেশে আরও সম্প্রসারণ হবে, সারাদেশব্যাপী আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাহকগণ তাদের অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা পাবে এটাই সকলের প্রত্যাশা করে।

পরিশেষে

আমাদের ওয়েবসাইট আসল পথ ডট কম এর মাধ্যমে অনলাইন ব্যাংকিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা জানতে পারলেন। তারপরও যদি আপনাদের বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আরো একবার ভালোভাবে পড়েন। আমার দীর্ঘ বিশ্বাস আমাদের আর্টিকেলটি সম্পন্ন ভালোভাবে পড়লে আপনারা অনলাইন ব্যাংকিং সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পাবেন এবং আপনি অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে সফল হবেন।

ট্যাগঃ  অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা  অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা  অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা  অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা  অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা  অনলাইন ব্যাংকিং কি? এর সুবিধা ও অসুবিধা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *