বর্তমানে আপনারা যারা ইউরোপে যেতে চান তাদের নিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে এই সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলের মানুষের ইউরোপে যেতে আগ্রহী। তবে আমাদের বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। আমাদের এ দেশের মানুষ ইউরোপ যেতে খুবই আগ্রহ বোধ করে থাকে। অনেকের স্বপ্ন রয়েছে যারা বিভিন্ন কাজে ইউরোপীয় দেশে যেতে চাই। কেউ পড়াশোনা করতে যেতে চাই। কেউ চাকরি করতে যেতে চাই। কেউ ব্যবসা করতে যেতে চাই। কেউবা ভ্রমণ করতে যেতে চাই।
আমরা যারা ইউরোপে যেতে অত্যন্ত আগ্রহী তাদের প্রথমে ইউরোপীয় দেশ সম্পর্কে ধারণা নেয়া প্রয়োজন। ইউরোপের অবস্থান কোথায়? ইউরোপের আয়তন কত? এর জনসংখ্যা কেমন?
ইউরোপের দেশগুলো কেমন উন্নত? এদের জীবন যাত্রার মান কেমন? তাদের সংস্কৃতি কেমন? তাদের ভাষা কি? ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
ইউরোপ
ইউরোপ মহাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ। ইউরোপ মহাদেশে মোট ৫০ টি দেশ রয়েছে। ইউরোপ মহাদেশের ৪৮ টি স্বাধীন রাষ্ট্র রয়েছে। ইউরোপ মহাদেশের ৪৮ টি স্বাধীন রাষ্ট্র থাকলেও এদের মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২৭ টি দেশ নিয়ে গঠিত । ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ গুলো তাদের অর্থনৈতিক লেনদেন পরিচালিত করে ইউরো মুদ্রা দিয়ে।
ইউরোপ মহাদেশের মোট আয়তন ১,০১,৮০,০০০ বর্গ কিলোমিটার এর মধ্যে শুধু রাশিয়াতেই রয়েছে ৪০% আয়তন।
জেনে নিন
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭ টি দেশ রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সবগুলো দেশের উন্নত। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী, শিল্পোন্নত, প্রযুক্তি গত দিক থেকে উন্নত। মোটকথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবগুলো দেশ শিক্ষা ব্যবস্থা চিকিৎসা ব্যবস্থা যোগাযোগ যাতায়াত ব্যবস্থা এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশে পৌঁছে গেছে। আসুন জেনে নেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশের নাম হল-
যুক্তরাজ্য,ফ্রান্স, জার্মানী, গ্রীস, হাঙ্গেরি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, মালটা, নেদারল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইডেন, সাইপ্রাস, স্পেন, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লুক্সেমবার্গ, লিথুনিয়া।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাষা ২৩ টি। এর সদর দপ্তর ব্রাসেলস, বেলজিয়াম।
ইউরোপ মহাদেশের মোট জনসংখ্যা ৭৪২৪৫২০০০ (২০১৩ – ৩য়)।
আমরা জানি বিশ্বে বর্তমানে সাতটি মহাদেশ রয়েছে তা হল- এশিয়া, ইউরোপ , আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং আন্টার্টিকা মহাদেশ।
শুধু মাত্র আন্টার্টিকা মহাদেশ ছাড়া সকল মহাদেশেই মানুষ বসবাস করে থাকে। আন্টার্টিকা মহাদেশ বরফাচ্ছাদিত হওয়ায় সেখানে কোনো লোকজন বসবাস করতে পারে না, মানুষ বসবাসের উপযোগী পরিবেশ এখনো গড়ে ওঠেনি।
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ ইউরোপে যেতে আগ্রহী। আমাদের বাংলাদেশের মানুষও অত্যন্ত আগ্রহী। বিশেষ করে যারা প্রবাসী হিসেবে বিদেশে থাকতে চাই তাদের একটি লক্ষ্য থাকে ইউরোপে যাওয়া।
ইউরোপ মহাদেশের দেশ গুলো অর্থনৈতিকভাবে খুবই উন্নত। তাই প্রবাসমুখি সকল মানুষ ভেবে থাকেন কোনরকমে ইউরোপে যেতে পারলে প্রচুর পরিমানে আয় করা সম্ভব হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো যাওয়াটা প্রায় একই নিয়ম রয়েছে। এই ইউনিয়নভুক্ত আপনি যে কোন দেশে যেতে চান এখানে একই ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
ইউরোপে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে। যেমন- স্টুডেন্ট ভিসা, কাজের ভিসা, ব্যবসায়িক ভিসা এবং ভ্রমণ ভিসা।
আপনি ইউরোপে যে ভিসাতে যেতে আগ্রহী সে অনুযায়ী আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
স্টুডেন্ট ভিসা
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমাদের বাংলাদেশের ছাত্ররা লেখাপড়া করার জন্য স্টুডেন্ট ভিসায় রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের দেশের ছাত্ররা যখন উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চাই তখন তাদের একটা লক্ষ্য থাকে ইউরোপের কয়েকটি দেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করবে।
উচ্চ শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ডিগ্রীগুলো হল বার-অ্যাট-ল, চিকিৎসা শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রযুক্তি, নানা ধরনের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করার জন্য ইউরোপের দেশগুলোর দিকে যেতে আগ্রহী বেশি হয়।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ নিয়ে কম খরচে ছাত্ররা যাওয়ার সুযোগ পাই। এক্ষেত্রে ছাত্রদের স্টুডেন্ট ভিসা ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে চাইলে 15 থেকে 20 লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়।
পেশাগত ভিসা
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চাকরি করার উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে কোন কাজের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থাকলে সহজেই পেতে পারেন। সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক প্রতিবছর ইউরোপের দেশগুলোতে লোক নেয়া হয় যদি সরকারের মাধ্যমে আপনি ইউরোপের যে কোন দেশে যেতে পারেন তাহলে প্রচুর পরিমাণে ইনকামের সুযোগ রয়েছে ইউরোপে গিয়ে আপনার প্রতিমাসে 50 হাজার টাকা থেকে 5 লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আপনার বেতন নির্ভর করবে আপনার কাজের উপর।
ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেশ চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় 10 লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ গুলোতে। আপনার যদি ইউরোপে কাজের জন্য পেশাগতভাবে যেতে চান তাহলে আপনার খরচ পড়বে 10 থেকে 12 লক্ষ টাকা।
ব্যবসায়ী ভিসা
ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশ অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন যেমন আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশী অনেক লোক রয়েছেন যেমন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ইউরোপের দেশগুলোতে প্রচুর পরিমানের সুনাম অর্জন করেছে এবং চাহিদা সৃষ্টি করেছেন এছাড়াও চা চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ক্ষেত্রে ইউরোপের দেশ গুলোকে এখন বাংলাদেশে রপ্তানি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছে।
এছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশীদের এখন শপিং সেন্টার শপিং মল গড়ে তুলতে পেরেছে অত্যন্ত সুনামের সাথে তারা পরিচালিত করে আসছে এবং তারা নিজেরা লাভবান হচ্ছে এবং বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করা যাচ্ছে।
আপনি যদি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেতে চান তাহলে আপনি কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই একেবারে সহজ শর্তে যেতে পারবেন। এখানে আপনার বিজনেস পারমিট করতে এবং এরুদিতে আপনার সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
আরও জানুন
- অনলাইনে ব্যবসা করার নিয়ম
- কাপড়ের ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৩
- এসএসসি রেজাল্ট ২০২২
- ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব বাড়াতে করণীয়
- কম্পিউটার ফাস্ট রাখার উপায় গুলো কি কি ?
ভ্রমণ ভিসা
আমাদের দেশের অনেকেই রয়েছে ভ্রমণপিপাসু যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করতে অনেক আনন্দ বোধ করা থাকে। আপনি যদি ইউরোপে ভ্রমণ করতে যেতে চান তাহলে ইউরোপের যে কোন দেশে ভ্রমণের জন্য যেতে পারেন এই সুযোগ রয়েছে। ভ্রমণের জন্য আপনি ইউরোপে গেলে আপনাকে টুরিস্ট ভিসা গ্রহণ করতে হবে।
এই ভিসার মেয়াদ থাকবে মাত্র তিন মাস। আপনি ইউরোপের যে কোন দেশে যেতে পারবেন। ইউরোপের যে কোন দেশে আপনি যদি ভ্রমণ করতে যেতে চান তাহলে আপনার কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন- আপনি আগে অন্য কোন দেশে গিয়েছেন কিনা? এখানে একটু যাচাই-বাছাই করা হবে। আপনি যদি অন্যান্য দেশে মিনিমাম পাচ থেকে সাতটি দেশে ভ্রমণ করে থাকেন তাহলে আপনি ইউরোপ ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।
ইউরোপের যদি আপনার ভ্রমণ করতে চান তাহলে এখানে আপনার খরচ হবে পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা।
ইউরোপের যে কোন দেশে আপনি যেতে চান না কেন প্রত্যেকটা দেশে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। এ নিয়মগুলো আপনাকে পূরণ করে তারপরে যেতে হবে। ইউরোপে নিয়ম অনুযায়ী গেলে যাওয়াটা খুব সহজ কিন্তু নিয়মবহির্ভূত কেউ যেতে চাইলে তার জন্য এটি অত্যন্ত কঠিন একটি ব্যাপার। সরকারের মাধ্যমে আইনসম্মতভাবে ইউরোপে গেলে আপনি বৈধভাবে থাকার সুযোগ পাবেন এবং পরবর্তীতে আপনের নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
ইউরোপে যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে ইউরোপে যাওয়ার আবেদন করতে হবে এবং ইউরোপের দেশগুলোর এম্বাসি রয়েছে সেখানে আপনার যোগাযোগ রাখতে হবে।
শেষ কথা
আপনি যদি ইউরোপে যেতে চান তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ইউরোপে যাওয়া সম্পর্কে। ইউরোপে আপনি যেতে চাইলে আইনসম্মতভাবে যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো হবে। পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে দেখা যায় তারা অবৈধভাবে ট্রলারযোগে বা নৌকায় উঠে ইউরোপে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে এবং পানিতে ডুবে আহত ও নিহত হয়ে থাকে। এসকল খুব দুঃখজনক ঘটনা। আপনারা যদি কেউ নিতে চান তাহলে অবশ্যই বৈধ ভাবে যাবেন কারণ বৈধভাবে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে আপনি চেষ্টা করলেই যেতে পারবেন। আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। ভালো থাকুন এই প্রত্যাশায় এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।
ট্যাগঃ ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে