এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা

এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা

এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা

এজেন্ট ব্যাংকিং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত ও তালিকাভুক্ত ব্যাংক সমূহের অধীনে অর্থ লেনদেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত যে সকল ব্যাংক রয়েছে সে সকল ব্যাংকগুলো তাদের এক শাখা থেকে অন্য শাখায় টাকা আদান প্রদানের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো এজেন্ট ব্যাংকিং।

অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে বা টাকা আদান প্রদানের ক্ষেত্রে তফসিলি ব্যাংক এর মতই সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। তবে যেকোনো একটি তফসিলি ব্যাংক তার এক শাখা থেকে শুধুমাত্র অন্য শাখাতেই অর্থ লেনদেন করতে পারে।। একটি তফসিলি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায় তবে এটি একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা
এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা

আপনারা যারা এজেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পারবেন এজন্য একটু ধৈর্য সহকারে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। এছাড়াও আমাদের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা। তাহলে আসুন জেনে নেই বিস্তারিত-

এজেন্ট ব্যাংকিং কাকে বলে

এজেন্ট ব্যাংকিং হল বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত তফসিলি ব্যাংক সমূহের অর্থ লেনদেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা যার মাধ্যমে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে টাকা লেনদেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে গ্রাহকগণ যারা ব্যাংকে গিয়ে লেনদেন করতে সমস্যা অনুভব করেন বা ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে দূরে অবস্থান করছেন তারা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

তফসিলী ব্যাংকসমূহ তাদের গ্রাহক সেবা সারা দেশব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার জন্য তারা এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করেছে। এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে মূল ব্যাংকের হিসাব এর মতই টাকা উঠাতে পারবেন এবং জমা দিতে পারবেন, লোন গ্রহণ করতে পারবেন আবার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন।

এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠাতে পারবেন অর্থাৎ একটি মূল ব্যাংকের শাখা থেকে যে ধরনের আর্থিক লেনদেন করা যায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ঠিক সেরকমই আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন।

তাহলে একথা বলা যায় তালিকাভুক্ত বা বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে তফসিলি ব্যাংক সমূহ তাদের সারাদেশব্যাপী প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাহক সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অর্থ লেনদেনের কার্যকরী প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে তার নাম হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং।

বাংলাদেশের অনেক ধরনের এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে। জনপ্রিয় কয়েকটি এজেন্ট ব্যাংকিং এর নাম নিম্নে দেওয়া হল। যেমনঃ

  • ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং
  • অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং
  • ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং
  • ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং
  • দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড এর এজেন্ট ব্যাংকিং
  • এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড এর এজেন্ট ব্যাংকিং
  • ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং ইত্যাদি।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর পূর্বকথা

এজেন্ট ব্যাংকিং এখন পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রচলিত রয়েছে। সর্বপ্রথম ব্রাজিলে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয়েছে। তারপর থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেমনঃ কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, পেরু, বলিভিয়া, ফিলিপাইন, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, ভারত, উগান্ডা, ভেনিজুয়েলা, আর্জেন্টিনা সহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এজেন্ট ব্যাংকিং’ সেবা চালু রয়েছে। এই ব্যাংকিং সেবা মূলত গ্রামীণ জনসাধারণের লেনদেন সহজলভ্য করে তোলা এবং সাশ্রয়ী ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার মূল্য ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রম ছোট পরিসরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা সমূহ

  • দিবারাত্রি যেকোনো সময় লেনদেন করা যায় অর্থাৎ 24 ঘণ্টায় লেনদেন চালু রয়েছে।
  • ব্যাংক বন্ধের দিন সমূহ যেমনঃ সাপ্তাহিক বন্ধ শুক্রবার ও শনিবার এজেন্ট ব্যাংকিং লেনদেন করা যায়।
  • স্মার্টফোনের মাধ্যমে অ্যাপস ব্যবহার করে এজেন্ট ব্যাংকিং লেনদেন করা যায় এতে করে অল্প সময়ের মধ্যেই টাকা আদান প্রদান করা যায়। আপনার একাউন্টের স্টেটমেন্ট জানতে পারবেন অল্প সময়ের মধ্যেই।
  • একজন ব্যক্তি ব্যাংকের শাখায় না গিয়েও তার হিসাবের সমস্ত লেনদেন এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে করতে পারে।
  • এজেন্ট ব্যাংকিং এর গ্রাহক তার হিসাব পরিচালনার মাধ্যমে ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারে সহজ শর্তে। এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের লোন গ্রহণ করা যায়। যেমনঃ কৃষকদের জন্য রয়েছে কৃষি ঋণ, ব্যবসায়ীদের জন্য রয়েছে এসএমই ঋণ এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য রয়েছে শিল্প ঋণ। এভাবে নানা ধরনের ঋণ এখন এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করা যায়।
  • ঋণ গ্রহণের পাশাপাশি ঋণের কিস্তি প্রদান করা যায় এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
  • এজেন্ট ব্যাংকিং এ টাকা জমা রাখা ও আদান-প্রদান করা সম্পূর্ণ নিরাপদ। এটি একটি শক্তিশালী ও নিরাপত্তা ব্যাংকিং সলিউশন যা মানুষের স্পর্শ এড়ানোর জন্য QR কোড OCR,  NFC প্রযুক্তি ইত্যাদি কন্টাক্টলেস পেমেন্ট সলিউশন ব্যবহার করে।
  • এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন ধরনের ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। যেমনঃ বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, শিশুদের জন্য ভাতা, মাতৃমঙ্গল ভাতা, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপবৃত্তি প্রদান ইত্যাদি।
  • বীমার প্রিমিয়াম জমা দেওয়া যায় এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
  • বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ করা যায় এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
  • এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রদান করা যায়।
  • এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলা যায় যা মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পেনশন স্কিম চালু করা যায়।

উপরোক্ত সুবিধাগুলো ছাড়াও আরো নানা ধরনের সুবিধা রয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।। এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যাংকিং কার্যক্রম গুলো প্রান্তিক পর্যায়ে গ্রাহকদের মাঝে পৌঁছে দেওয়াই মূল লক্ষ্য। তাই আপনি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে গ্রাহক সেবা পেয়ে যাবেন খুব সহজে।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা সমূহ

এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু অসুবিধা লক্ষণীয়। এজেন্ট ব্যাংকিং স্বল্প পরিসরে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য তারা ব্যাংকের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে পারেনা এজন্য গ্রাহকদের বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হয় যা নিম্নে আলোচনা করা হল-

এজেন্ট ব্যাংকিং লেনদেনের পরিসীমা রয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ এক দিনে 6 লক্ষ টাকা লেনদেন করা যায় আপনার অনেক টাকা লেনদেনের প্রয়োজন থাকলেও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আপনি 6 লাখ টাকার অধিক লেনদেন করতে পারবেন না।

এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চল গ্রাম অঞ্চলে ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রমের একটি প্রক্রিয়া তাই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা নির্দিষ্ট এলাকার জন্য একজন এজেন্ট নিয়োগ করা হয় তার মাধ্যমেই আর্থিক লেনদেন গুলো সুসম্পন্ন করা হয়ে থাকে এজেন্ট ব্যাংকিং এ টাকা উঠাতে গেলে অনেক সময় এজেন্ট ব্যাংকের দায়িত্বরত এজেন্ট বেশি টাকা দিতে পারেন না এবং টাকা পরে দেবে বলে জানিয়ে দেন।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি দাঁড়ায় তার আর্থিক লেনদেন গুলো পরিচালিত হয় বলে অনেক গ্রাহকের টাকা উঠানোর ক্ষেত্রে আর্থিক সংকট জটিলতায় প্রায় সময় শোনা যায়।

এজেন্ট ব্যাংকিং স্বল্প পরিসরে হওয়ায় অনেক গ্রাহক রয়েছে যারা বিশ্বস্ততার সাথে লেনদেন করতে ভয় পাই।

ট্যাগঃ এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা এজেন্ট ব্যাংকিং কি এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা

আরও পড়ুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *